গলব্লাডারে পাথর হলে কি কি সমস্যা হয় এবং কি করা উচিত

গলব্লাডারে পাথর হলে কি কি সমস্যা হয় এবং কি করা উচিত

পিওথলি বা গলব্লাডার মুক্তোর আকৃতির মতো দেখতে একটি অঙ্গ, যা লিভারের ডান পাশের ঠিক নিচে থাকে। এটি লিভার থেকে পাচকরস (পিও) সংগ্রহণ করে পিওথলিতে জমা রাখে। আমরা যখন খাবার খাই তখন পাচকরস গলব্লাডার থেকে বের হয়ে আসে এবং খাবার হজম করতে সাহায্য করে। একারণে গলব্লাডারে পাথর হলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পাচক রস থেকে পাওয়া কোলেস্টেরল ও অন্যান্য পদার্থের কারণে গলব্লাডারে পাথর তৈরি হয়। এই পাথর বালুর একটা কণার চেয়ে ছোট বা গল্ফ বলের মতো বড় হতে পারে। যাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি বা ফ্যাট রয়েছে এবং যারা খুব দ্রুত ওজন কমাতে চােষ্টা করেন, তাদের গলব্লাডারে পাথর হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।

গলব্লাডারে পাথর হলে কি কি সমস্যা হয় ?

গলব্লাডারে পাথর হলে শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন-
  • পেটের ডান দিকে ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে তা ডান কাঁধ পর্যন্ত ছড়িয়ে পরে।
  • কাঁপনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে এবং জ্বরের সাথে সাথে পেটে ব্যথা হতে পারে।
  • অতিরিক্ত তেল ও মশলা দিয়ে রান্না করা খাবার খেলে পেটের ব্যথা আরো বেড়ে যেতে পারে এবং ঘন ঘন বমি হতে পারে।
  • পেটে ব্যথার পাশাপাশি হেপটাইটিস দেখা দিতে পারে। কারণ গলব্লাডারে আক্রান্ত রোগীদের সহজেই হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি থাকে।
উপরে উল্লেখিত সমস্যাগুলো দেখা দিলে অবহেলা না করে একজন রেজিষ্ট্রেড ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। অন্যথায় সমস্যা আরো গুরুতর রূপ নিতে পারে।

গলব্লাডারে পাথর হলে কি করা উচিত ?

গলব্লাডারে পাথর হলে আমাদের কি করা উচিত - এই বিষয়ে আমাদের সুষ্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ও আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে।
  • পেট কেটে অস্ত্রোপচার: আজকাল পেট কেটে অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন পরে না। গলব্লাডারে অতিরিক্ত পরিমাণে পাথর হলে অথবা কোন প্রকার জটিলতা দেখা দিলে পেট কেটে অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন পরে। তবে পাথর যদি পিত্তনালিতে থাকে তাহলে কাটাছেঁড়ার প্রয়োজন পরে না। সেক্ষেত্রে মুখের ভিতর দিয়ে যন্ত্র প্রবেশ করিয়ে পাথর অপসারণ করা যায়।
  • ল্যাপারোস্কপি: গলব্লাডার বা পিত্তথলিতে পাথর হলে সাধারণত ল্যাপারোস্কপি করে পাথর অপসারণ করা হয়। সেক্ষেত্রে পেট কাটার প্রয়োজন পরে না, শুধু পেটে চারটি ছোট ছোট ছিদ্র করে ল্যাপারোস্কপি যন্ত্রের মাধ্যমে পাথর বের করে আনা হয়। অস্ত্রোপচার করার পরবর্তী সময় ল্যাপারোস্কপি ছিদ্রে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।
  • ওষুধ গ্রহণ: গলব্লাডারের পাথর ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে অপসারণ করা সম্ভব নয়। গলব্লাডারে দীর্ঘদিন পাথর থাকলে অনেকের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা দেখা দেয় না, তবে অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেক সময় পিত্তথলির পাথর পিত্তনালিতে চলে যায়। যার ফলে জন্ডিসের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়াও পিত্তথলিতে বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ বা ক্যান্সার সৃষ্টি হয়। তাই গলব্লাডারে পাথর হলে যত দ্রুত সম্ভব অপসারণ করা উচিত।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url