এন্টি অক্সিডেন্ট কি? এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা।
এন্টি অক্সিডেন্ট কি?
ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস ক্রমাগত আমাদের শরীরের কোষ আক্রমণ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এই ধরনের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস থেকে রক্ষা করে। কোনো কারণে আমাদের শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ কমে গেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে যায় এবং আমরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হই। তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা
এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা নিচে দেয়া হয়েছে।
- পালং শাক: পালন শাকে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল লুটেইন এবং জেক্সানথিন। এটি ক্ষতিকারক UV আলো রশ্মি সহ প্রায় সমস্ত ক্ষতিকারক আলোক রশ্মি থেকে আপনার চোখকে রক্ষা করতে কাজ করে এবং চোখের ভাইরাল সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
- লাল বাঁধাকপি: সবুজ শাকসবজির মধ্যে পালং শাকের পরেই রয়েছে লাল বাঁধাকপি। এটি ভিটামিন এ, সি এবং কে সহ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। লাল বাঁধাকপিতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এটি শরীরের প্রদাহ কমাতেও খুব ভালো কাজ করে।
- বেরি জাতীয় ফল: ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, ক্র্যানবেরি, ব্ল্যাক বেরি, মালবেরি এবং তুঁত সহ সমস্ত বেরি জাতীয় ফলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সহায়তা করে।
- জাম: বেরির মতো, জামেও প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা শরীরের সামগ্রিক গঠনে খুব কার্যকর।
- গ্রিন টি: গ্রিন টি-তে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে সতেজ রাখে এবং ক্যাটেকাইন নামক আরেকটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দাঁত গঠনে সাহায্য করে এবং মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি রোধ করে, গলার বিভিন্ন সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
- কাজু বাদাম: zeaxanthin এবং lutein নামক দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের চোখকে UV রশ্মি থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও কাজু বাদামে বেশ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্যান্সার কোষ গঠনে বাধা দেয়।
- টমেটো: টমেটোতে উপস্থিত লাইকোপিন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের গঠনে কাজ করে এবং ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এছাড়াও, ফুসফুস, পাকস্থলী এবং প্রোস্টেট ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ প্রতিরোধে টমেটো উপকারী।
- গুড়: গুড়ের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধ করে।
- বিটরুট: বিটরুটে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলন এবং পাচনতন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ডার্ক চকোলেট: ডার্ক চকোলেট সরাসরি রক্তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়ায় এবং খারাপ "এলডিএল কোলেস্টেরল" প্রতিরোধ করে, যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- জলপাইয়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- অলিভ অয়েল চুলে ব্যবহার করা হলে এর এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুল পড়া রোধ করে এবং চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
এছাড়াও আরো কিছু খাবারে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যেমন: আমন্ড, কাজু, আখরোট, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, বাদাম তেল, বিচিজাতীয় ও ভেজিটেবল অয়েল ইত্যাদি। এছাড়াও, সমস্ত সবুজ শাকসবজিতে কমবেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে সকল মানুষ যযত বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করে, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তত বেশি শক্তিশালী হয়। তাই সুস্বাস্থ্য ও তারুণ্য ধরে রাখতে বেশি করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। অনেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ট্যাবলেট খান, নিবন্ধিত ডাক্তাররা গুরুতর ক্ষেত্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ট্যাবলেট প্রেসক্রিপ্ট করে থাকেন। নিজে থেকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-বর্ধক ট্যাবলেট গ্রহণ করবেন না।
অ্যান্টি অক্সিডেন্টের অভাবে কী হতে পারে?
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর অভাব বা ঘাটতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেবে। বিভিন্ন ভাইরাস খুব সহজেই আক্রমণ করবে। খুব অল্প বয়সেই বুড়ো দেখাবে, সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। দীর্ঘ সময় ধরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতি আপনার ইমিউন সিস্টেমকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে পারে।
তাই ছোট-বড় সবারই দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার রাখা খুবই জরুরি।
it is a good and usefull site.