মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা: কি খাবেন আর কি বর্জন করবেন? বিস্তারিত পড়ুন...

অতিরিক্ত মোটা হওয়া যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ঠিক তেমনি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চিকন হওয়া শরীরের জন্য আশঙ্কাজনক। তাই নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করার মাধ্যমে মোটা হওয়া আবশ্যক। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কোন খাবারগুলো গ্রহণ করলে মোটা হওয়া যায়। তাহলে চলুন এই আর্টিকেল থেকে মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা জেনে নেওয়া যাক।
মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা
মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকার সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, রাতের খাবার ও হালকা নাস্তায় যে খাবারগুলো রাখতে পারেন তা নিচে তুলে ধরা হলো-
সকালের নাস্তা
- দুধ: যারা মোটা হতে চান তারা সকালের নাস্তার পাশাপাশি বা যেকোনো বেলার খাবারের সাথে ১ গ্লাস দুধ যোগ করতে পারেন। কেননা এতে স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন, শর্করা, ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।
- ডিম: ডিম প্রায় সব ধরনের খাবারের সাথে খাওয়া যায়। মোটা হওয়ার জন্য সকালের নাস্তায় ১টি ডিম রাখতে পারেন। কেননা ডিমে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি ও অন্যান্য পুষ্টিগুণ ভরপুর থাকে।
- গমের রুটি: সকালের নাস্তায় গমের রুটি রাখতে পারেন। কেননা গমের রুটিতে থাকা উপাদানগুলো মোটা হতে সাহায্য করে।
- কলা: কলা খাওয়ার আগে কেটে নেওয়ার বা সময় নিয়ে ছোলার কোনো ঝামেলা নেই। সহজেই সকালের নাস্তার পর ১টি বা ২টি কলা খেতে পারেন।
- খেজুর: সকালের নাস্তায় কয়েকটা খেজুর রাখতে পারেন। কেননা খেজুরে থাকা উপাদানগুলো মোটা হতে সাহায্য করে।
উপরে সহজলভ্য ও স্বাস্থ্যকর খাবার তুলে ধরা হয়েছে। এই খাবারগুলো শুধু সকালে খেতে হবে বা প্রতিদিন খেতে হবে এমন নয়। যেকোনো ১টি বা ২টি খাবার সুবিধামত যুক্ত করতে পারেন আপনার মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা।
দুপুরের খাবার
- ডাল: ডাল একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আমিষ রয়েছে। তাই যারা মোটা হতে চান তারা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা ১ বাটি ঘন ডাল রাখতে পারেন।
- মুরগির মাংস: মোটা হওয়ার জন্য দুপুরের খাবারে ২ টুকরা মুরগির মাংস রাখতে পারেন। গরু ও খাসির মাংস খেয়ে মোটা হওয়া সম্ভব। কিন্তু গরু ও খাসির মাংসে কিছু অস্বাস্থ্যকর চর্বি রয়েছে, যা স্বাস্থ্য জন্য ক্ষতিকর। তাই এগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
- পনির: যারা মোটা হতে চান তারা দুপুরের খাবারে ফুলফ্যাটের পনির রাখতে পারেন। কেননা এতে স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকে।
- দই: দই দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়, এজন্য এতে দুধের সকল প্রকারের পুষ্টিগুণ থাকে। তাই যারা মোটা হতে চান তারা দুপুরের খাবার খাওয়ার পরে ১ বাটি দই খেতে পারেন।
- বিভিন্ন ধরনের সবজি: মাটির নিচে জন্মায় এমন যেকোনো সবজি যেমন- আলু, কচু, গাজর, মুলা, শালগম, মানকচু, ওল ইত্যাদি খেতে পারেন। কেননা এই সবজিগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। এছাড়াও মিষ্টি স্বাদের সবজি যেমন- মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া, স্কোয়াশ ইত্যাদি খেতে পারেন। এই সবজিগুলো মোটা হতে সাহায্য করে।
রাতের খাবার
দুপুরের জন্য যে খাবারগুলো উল্লেখ করা হয়েছে, একেই খাবার রাতে খেতে পারেন। আবার দুপুরের ব্যস্ততার কারণে অথবা বাসার বাইরে থাকার কারণে যদি কোনো খাবার বাদ পড়ে, তাহলে সেই খাবারগুলো রাতের খাবারের সাথে যোগ করতে পারেন।
হালকা নাস্তা বা স্ন্যাকস
- বাদাম: বাদাম একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, মিনারেল, ফাইবার ও ভিটামিন থাকে। তাই মোটা হওয়ার জন্য সুবিধামত যেকোনো বাদাম (কাজু বাদাম, কাঠবাদাম, পেস্তা বাদাম ও চিনাবাদাম) হালকা নাস্তায় রাখতে পারেন। চাইলে দুপুর ও রাতের খাবারের পরেও বাদাম খেতে পারেন। তবে বাজারে লবণ ও চিনিযুক্ত বিভিন্ন ধরনের বাদামের প্যাকেট পাওয়া যায়, যা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
- কিসমিস: কিসমিস মোটা হতে সাহায্য করে। তাই হালকা নাস্তায় কিসমিস রাখতে পারেন। কিসমিস যেহেতু আঙ্গুর ফল শুকিয়ে তৈরি করা হয়, সেহেতু অল্প কিসমিসে বেশি পরিমাণে মিনারেল ও ভিটামিন থাকে। তবে অনেকের সরাসরি কিসমিস খেলে দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে বাদাম বা দইয়ের সাথে মিশিয়ে কিসমিস খেতে পারেন।
- বিভিন্ন ধরনের বীজ: মোটা হওয়ার জন্য হালকা নাস্তায় বিভিন্ন ধরনের বীজ যোগ করতে পারেন। সম্ভব হলে সূর্যমুখীর বীজ, তিলের বীজ, মিষ্টি কুমড়ার বীজ ও তিসের বীজ যোগ করুন। চাইলে ভাত ও তারকারির উপরে ছিটিয়ে খেতে পারেন। এই বীজগুলোর একেকটা একেক ধরনের পুষ্টি বহন করে।