ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের নিয়ম

ভিটামিন ই ক্যাপসুল চুল ও ত্বকের জন্য অনেক উপকারি। কিন্তু আমরা অনেকেই ভিটামিন ই ক্যাপসুল সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে পারি না। ফলে উপকারের পরিবর্তে ক্ষতির সম্ভাবণা দেখা দেয়। এজন্য ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করার আগে নিয়মগুলো জেনে নেওয়া উচিত। তাহলে চলুন এই আর্টিকেল ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের নিয়মগুলো জেনে নেওয়া যাক।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের নিয়ম
ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহারের ৮টি নিয়ম নিম্নরূপ:
- বলিরেখা ও ব্রণের দাগ: ১ কাপ ঠান্ডা গ্রিন টির সাথে ১ চা চামচ মধু এবং ২টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি ঠান্ডা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে ত্বকে বলিরেখা ও ব্রণের দাগ দূর হয়ে যাবে।
- ঠোঁটের যত্নে: লিপ বাম বা ভেসলিনের সাথে ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঠৌঁটে লাগিয়ে রেখে দিন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে ঠোঁট ফাটা, ঠোঁটের কালচে দাগ বা ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
- চুলের যন্ত্রে: চুলে নিয়মিত যে তেল ব্যবহার করেন তার সাথে ৩টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে আলতোভাবে মাথার স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। ম্যাসাজ করার ২-৩ ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে এবং নতুন চুল গজাবে।
- মুখের মাস্ক: ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাথে ১ চা চামচ টক দই ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে নিন। এরপর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে ব্যবহার করলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে এবং শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
- চোখের ডার্ক সার্কেল: রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে চোখের চারপাশে ম্যাসাজ করুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে চোখের ডার্ক সার্কেল ও ফোলাভাব দূর হয়ে যাবে।
- ব্রণ বা ত্বকের অন্যান্য দাগে: পরিমাণ মতো লেবুর রসের সাথে একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের নির্যাস মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ব্রণ ও ত্বকের অন্যান্য দাগ দূর হয়ে যাবে।
- নখের যন্ত্রে: নখ ভেঙ্গে যাওয়া ও নখের পাশ থেকে ছাল ওঠার সমস্যা থাকলে নখের চারপাশ দিয়ে ভিটামিন ই ক্যাপসুল লাগালে সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
- কনুই ও হাঁটুর জেদি কালো দাগে: কনুই ও হাঁটুর জেদি কালো দাগ দূর করতে ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে সরাসরি দাগে লাগিয়ে নিন। এভাবে ২-৩ সপ্তাহ ব্যবহার করলে ফলাফল নিজেই দেখতে পারবেন।
ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাথে মধু, অ্যালোভেরা, লেবু, টক দই, ডিম, নারিকেল তেল, পেঁপে, গোলাপজল ইত্যাদি মিশিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। এই ফেসপ্যাকগুলোর উপকারিতা অনেক বেশি। তাই যারা ফর্সা হতে চান, তারা নিচে দেয়া পদ্ধতিগুলো ফলো করে সহজেই ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন।
- ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাথে ২ চা চামচ দই এবং এক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন। এরপর তৈরি করা ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে সপ্তাহ ২-৩ দিন ব্যবহার করলে ত্বকের কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর হয়ে যাবে এবং ত্বক হয়ে ওঠবে উজ্জ্বল।
- ১৫-২০ ফোঁটা ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাথে ২ টেবিল চামচ পেঁপে এবং ১ টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন। এরপর তৈরি করা ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে শুকিয়ে যাবার জন্য অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাকটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা দ্রুত বাড়বে।
- ২টি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাথে পরিমাণ মতো লেবুর রস মিশিয়ে ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে নিন। এরপর শুকিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করলে গাল ফাটার সমস্যা, ত্বকের ছোপ ছোপ কালো দাগ দূর হয়ে যাবে এবং ত্বক হয়ে ওঠবে উজ্জ্বল।
- ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাথে ১ টেবিল চামচ টক দই এবং ১ টেবিল চামচ ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন। এরপর তৈরি করা ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করলেও ত্বক হয়ে ওঠবে প্রাণবন্ত ও উজ্জ্বল।
- ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাথে ১ চা চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি মুখে ঘষে ঘষে ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করার পর শুকিয়ে যাওয়ার জন্য ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে রুমাল দিয়ে মুছে ফেলুন অথবা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের ডার্ক স্পট দূর হয়ে যাবে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।