মোটা হওয়ার সহজ ও কার্যকরী ১০টি উপায়
কিছু মানুষ অতিরিক্ত মোটা, আবার কিছু মানুষ অতিরিক্ত চিকনও হয়ে থাকেন। উভয় ক্ষেত্রেই নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। তবে আজ চিকন থেকে মোটা হওয়ার বিষয়ে আলোচনা করবো। যখন কোনো ব্যাক্তি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি চিকন হন, তখন তিনি ‘আন্ডারওয়েট’ সমস্যায় ভুগতে থাকেন। আর আন্ডারওয়েটের সমস্যা হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এছাড়াও অতিরিক্ত চিকন হওয়ার কারণে পছন্দের জমাকাপড় পড়া যায় না, মানুষের কটুকথা শুনতে হয় ইত্যাদি। ফলস্বরুপ জীবনে হতাশা নেমে আসে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আমরা আন্ডারওয়েট সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে মোটা হওয়ার চেষ্টা করে থাকি।
মোটা হওয়ার উপায়
মোটা হওয়ার ১০টি উপায় নিচে তুলে ধরা হলো:
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: মোটা হতে চাইলে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডাল ইত্যাদি বেশি পরিমাণে খেতে হবে। কেননা প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার মোটা হতে সাহায্য করে।
- ক্যালোরি গ্রহন করুন: মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকায় পিনাট বাটার, ফুল-ফ্যাট ডেইরি, কলা ইত্যাদি যোগ করুন। কেননা এই খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমানে ক্যালোরি রয়েছে, যা মোটা হতে সাহায্য করে। তাই যারা দ্রুত মোটা হতে চান তারা প্রতিদিন ৬০০-৭০০ ক্যালোরি গ্রহণ করুন এবং যারা ধীরে ধীরে মোটা হতে চান তারা প্রতিদিন ৪০০-৫০০ ক্যালোরি গ্রহণ করুন।
- কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাযুক্ত খাবার: মোটা হতে চাইলে শর্করাযুক্ত খাবার যেমন- ভাত, রুটি ইত্যাদি খেতে পারেন। কেননা শর্করা মোটা হতে সাহায্য করে।
- মাটির নিচে জন্মানো সবজি: মোটা হওয়ার জন্য মুলা, আলু, ওল, গাজর, মিষ্টি আলু, শালগম, কচু, মানকচু ইত্যাদি খেতে পারেন। কেননা এতে বাড়তি ক্যালোরি রয়েছে, যা মোটা হতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যেকোনো একটি সবজি যোগ করতে পারেন।
- স্বাস্থ্যকর ফ্যাটযুক্ত খাবার: মোটা হওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর ফ্যাটযুক্ত খাবার বেশি পরিমাণে খেতে হবে। বাদাম (কাজু বাদাম, চিনাবাদাম, পেস্তা বাদাম, কাঠবাদাম), অলিভ অয়েল, আভোকাডো ও বিভিন্ন ধরণের বীজে প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রয়েছে। তাই মোটা হওয়ার জন্য এই খাবারগুলো বেশি পরিমাণে খেতে পারেন।
- ঘন ঘন খাবার খেতে হবে: একেবারে অনেক কিছু না খেয়ে, সেই খাবারগুলো অল্প অল্প করে ঘন ঘন খেতে পারেন। এতে করে শরীরের বেশি পরিমাণে ক্যালোরি প্রবেশ করবে এবং ধীরে ধীরে মোট হয়ে ওঠতে সাহায্য করবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো: মোটা হওয়ার জন্য শুধু খাবার খেলে হবে না, পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতেও হবে। কেননা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমালে শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়াকলাপ ঠিক থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের হরমোন ক্ষরণেও কোনো প্রকারের বিঘ্ন ঘটে না। তাই প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।
- ডায়েটে চিজ ও চকলেট রাখুন: সব সময় বাহিরের খাবার খেতে মানা করা হলেও মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে বাহিরের খাবার যেমন- আইসক্রিম, বার্গার, পেস্ট্রি ইত্যাদি খুব কার্যকরি। তবে এই খাবারগুলো সীমিত পরিমাণে খেতে হবে, অন্যথায় শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। পাশাপাশি প্রতিদিনের ডায়েটে চিজ ও চকলেট রাখতে পারেন।
- টেনশনমুক্ত থাকুন: চিকন হতে যেমন টেনশনমুক্ত থাকা প্রয়োজন, ঠিক তেমনি মোটা হতেও টেনশনমুক্ত থাকা প্রয়োজন। যদিও বর্তমান সময়ে টেনশনমুক্ত থাকা মোটেও সহজ নয় তারপরও যতটা সম্ভব টেনশনমুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন।
- ব্যায়াম: অনেকের ধারণা চিকন হওয়ার ক্ষেত্রে শুধু ব্যায়াম করা প্রয়োজন, কিন্তু এই ধারনাটা একদম ভুল। চিকন হওয়ার ক্ষেত্রে যেমন ব্যায়ামের প্রয়োজন ঠিক তেমনি মোটা হওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যায়ামের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শুধু দৌঁড় ঝাঁপ করলে চলবে না। নিয়ম মেনে সঠিক ও উপযুক্ত ব্যায়াম করতে হবে। এক্ষেত্রে জিমে একজন অভিজ্ঞ ট্রেনারের পরামর্শে ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। কারণ মোটা হওয়ার জন্য আপনার স্বাস্থ্য উপযোগি ব্যায়াম কোনটি হতে পারে তা কেবল একজন অভিজ্ঞ ট্রেইনার বলতে পারেন।
এছাড়াও সঠিক পরিমাণে পানি পান করবেন। যদি ঘনঘন খাবার গ্রহণ করেন তবে পানিও ঘনঘন পান করবেন। কেননা আমাদের শরীর থেকে নানা রকম ক্ষতিকর পদার্থ বেরিয়ে যায় ইউরিনের মাধ্যমে। আর এই ইউরিন সঠিক পরিমাণে উৎপন্ন হতে হলে পরিমাণমতো পানি পান করা জরুরি।
উপরের নিয়মগুলো মেনে চলতে পারলে আপনি দ্রুত মোটা হয়ে সুন্দর সাস্থ্যের অধীকারি হতে পারবেন। মনে রাখবেন যেকোনো কাজ নিয়ম করে করতে থাকলে সুফলতা আসে। অন্যদিকে অনিয়ম করে কিছু করতে থাকলে কাঙ্খিত ফল না এসে তার বিপরীত ফলাফল দেখা দেয়।