শিশুরা দিনে কতবার প্রস্রাব করে? প্রস্রাবের সমস্যা ও করনীয় কি?

শিশু বাচ্চা যদি ঘন ঘন প্রসাব করে তাহলে ভয় পাবার কারণ নেই। ঘন ঘন প্রসাব করা কোনো রোগ নয়, মূলত অন্য কোনো রোগ বা সমস্যার কারণে শিশুর এমন সমস্যা হতে পারে। এজন্য আমাদেরকে মূল সমস্যা খুজে বের করতে হবে।
অনেকে পরামর্শ দিয়ে থাকে বাচ্চা কম প্রসাব করলে বেশি বেশি পানি পান করাতে, আবার অনেক মা বাচ্চাকে কম পানি পান করান ঘনঘন প্রসাব করার কারণে। এটা করা যাবেনা, স্বাভাবিক মাত্রায় পানি পান করার পর যদি স্বাভাবিক পরিমাণে প্রসাব না করে তাহলে বুঝতে হবে, শিশুর অন্য কোনো সমস্যা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিলম্ব না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
- শিশুরা দিনে কতবার প্রস্রাব করে?
- শিশুর প্রস্রাব কম হলে করনীয়:
- শিশুর প্রস্রাব বেশি হলে করনীয়:
- বাচ্চাদের প্রস্রাব না হলে করনীয়:
শিশুরা দিনে কতবার প্রস্রাব করে?
শিশুদের দিনে কতবার প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক সেটা নির্ভর করবে শিশুর বয়স এবং খাবারের উপর।
- বাচ্চার বয়স এক সাপ্তাহ: এক সপ্তাহ বয়সি বাচ্চা সাধারণ ১৫ থেকে ২০ বার প্রসাব করতে পারে। তাছাড়া বুকের দুধ খাবার কারণে বারবার পায়খানা করতে পারে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে প্রসাব বা পায়খানায় অস্বাভাবিক কোনো গন্ধ আসে কিনা। সিজার করে হওয়া বাচ্চারা প্রথম এক সাপ্তাহে পর্যাপ্ত পরিমাণ বুকের দুধ পায়না, এজন্য বাইরের দুধ খাওয়ানো হয়, এক্ষেত্রে ডাক্তার বা নার্সদের থেকে পরামর্শ করে দুধ খাওয়াবেন।
- বাচ্চার বয়স এক মাস থেকে তিন মাস: ১ থেকে ৩ মাস বয়সি কোনো বাচ্চা যদি স্বাভাবিক খাবার গ্রহণ করে এবং অন্য কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে ২৪ ঘন্টায় কমপক্ষে ৮ বার বা তার বেশি প্রসাব করবে, তবে কোনো সময় ২০ বারের বেশি হলে অস্বাভাবিক হিসেবে ধরবেন।
- বয়স ছয় মাসের বেশি হলে: ছয় মাসের বেশি বয়সি বাচ্চা ২৪ ঘন্টায় কমপক্ষে ৬ বার বা তার বেশি প্রসাব করবে। যদি ৬ বারের কম হয় কিংবা মাত্রারিক্ত হয় তাহলে সমস্যার লক্ষণ হিসেবে ধরবেন এবং ডাক্তারের নিকট জাবেন।
বি:দ্র: শিশুর প্রতি কেজি ওজনের অনুপাতে ১০০ মিলির বেশি প্রস্রাব করলে অতিরিক্ত প্রস্রাব বলে ধরা হয়। যেমন ধরুন বাচ্চার ওজন যদি হয় ৫ কেজি চাহলে বাচ্চা ২৪ ঘন্টায় ৫০০ মিলি পরিমাণে প্রসাব করলে স্বাভাবিক ধরবেন। কিন্তু এই অনুপাতের চেয়ে বেশি হলে বুঝবেন কোনো একটা সমস্যা হচ্ছে।
শিশুর প্রস্রাব কম বা বেশি হলে করনীয়
শিশুর প্রস্রাব কম হলে করনীয়:
উপরে বলা নূন্যতম মাত্রার চেয়ে কম পরিমাণে প্রসাব করলে সর্বপ্রথম বাচ্চার খাবারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। লক্ষ্য রাখুন এবং ঠিকঠাক ভাবে খাবার এবং পানি পান করান। ২ দিনের মধ্যে যদি স্বাভাবিক না হয় তাহলে আর দেরি করা উচিৎ হবেনা। দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন।
শিশুর প্রস্রাব বেশি হলে করনীয়:
শিশু অতিরিক্ত প্রস্রাব করলে আতঙ্কিত হবেননা। শুরুতে এর কারণ শনাক্ত করতে হবে। কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে অনুমান করতে হবে। বিষয়গুলো হলো— শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ আসলেই স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি কি না? এর সঙ্গে শিশুর শরীরে অন্য কোনো উপসর্গ আছে কি না? কত দিন ধরে হচ্ছে? শিশুর দৈনন্দিন পানি পানের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এ সমস্যা দূর করা যাচ্ছে কি না?
সুস্থ–স্বাভাবিক শিশু সাময়িকভাবে কিছু দিন বেশি প্রস্রাব করলে কিংবা দু–এক দিন বিছানায় প্রস্রাব করলে, শিশুটিকে বকা-ঝকা করবেননা, এতে বিরূপ প্রভাব পরতে পারে, লজ্জা পাবার কারণে বা ভয় পাবার কারণে। রাত আটটার পরে শিশুটিকে পানি খেতে নিরুৎসাহিত করুন, যদি এটা নিয়মিত অভ্যাস হয়ে থাকে। এমন করলে অনেক সময় সমস্যা দূর হয়ে যায়।
যদি সমস্যা দূর না হয়ে প্রস্রাবের পরিমাণ দিন দিন বাড়তে থাকে এবং শারীরিক বা মানসিক অবস্থার অবনতি ঘটতে শুরু করে, তাহলে সমস্যাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। এ পরিস্থিতিতে শিশুটির সঠিক রোগ নির্ণয় ও কার্যকর চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
বাচ্চাদের প্রস্রাব না হলে করনীয়:
যথেষ্ট পানি পান করার পরো যদি বাচ্চা ২৪ ঘন্টায় একবারো প্রসাব না করে বা মাত্র ১/২ বার করে তাহলে জরুরিভিত্তিতে ডাক্তার দেখাবেন, অলসতা করলে বড় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।