রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং ক্রিম
ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া কিংবা বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণে রানের চিপায় চুলকানি হতে পারে। সমস্যার শুরুতেই যদি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় তাহলে সহজেই সারিয়ে ফেলা সম্ভব। ভুল চিকিৎসা কিংবা অবহেলার কারণে সমস্যা চুলকানি থেকে ধীরে ধীরে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য আমাদের জানা জুরুরি রানের চিপায় চুলকানি হলে কি করা প্রয়োজন।
রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ক্রিম
রানের চিপায় চুলকানি দূর করার জন্য ভালো ব্রান্ডের ছত্রাকঘাতী (Antifungal) ক্রিম ব্যাবহার করবেন। সাধারণত ৩০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে 10mg/ 20mg একটি ক্রিম কিনে ব্যাবহার করলে সেরে যাবে আশা করা যায়, যদি আপনার ছত্রাকের আক্রমণে সমস্যা হয়ে থাকে। সাধারণত ৯০% রোগির রানের চিপায় চুলকানি ছত্রাকের আক্রমণেই হয়ে থাকে। তাই প্রাথমিকভাবে Antifungal ক্রিম সাজেস্ট করা হয়ে থাকে।
সতর্কতা: ক্রিম ব্যাবহারের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে যদি আশানুরুপ উপশম না হয় তাহলে ক্রিম ব্যাবহার বন্ধ করে দ্রুত একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবেন। এছাড়া একটানা দীর্ঘদিন ক্রিম ব্যাবহার করলে সমস্যা পূণরায় বাড়তে পারে, তাই ক্রিম ব্যাবহারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে।
রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
রানের চিপায় চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় নিচে দেয়া হয়েছে। এগুলো মেনে চললে সহজেই রানের চিপায় চুলকানি দুর করতে পারবেন।- সংক্রমিত স্থান পরিষ্কার করার জন্য কখনো সাবান ব্যাবহার করবেননা। সাবান ব্যাবহার করলে সাময়িকভাবে মনে হতে পারে পরিষ্কার হয়েছে, জীবাণুমুক্ত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে আপনার সমস্যা বা চুলকানি আরো বেড়ে যাবে সাবান ব্যাবহারের কারণে। তাই উক্ত স্থান পরিষ্কার করার জন্য হালকা কুসুম গরম পানি ব্যাবহার করবেন। খেয়াল রাখবেন পানি বেশি গরম থাকলে আক্রান্ত স্থানে ফোসকা পড়ে যেতে পারে
- ঢিলেঢালা পোশাক পড়বেন এবং জাঙ্গিয়া পড়া থেকে বিরত থাকবেন।
- কোনোভাবেই ঘাম জমতে দিবেননা, জমলেও দ্রুত টয়লেট টিসু দিয়ে মুছে ফেলবেন।
- Antifungal ক্রিম ব্যাবহার করবেন। ক্রিম বাসায় না থাকলে জরুরি প্রয়োজনে নিচের কোনো একটি পদ্ধতি অবলম্বণ করে উপসম পেতে পারেন।
- মধু ও রসুনের পেস্ট: কয়েক পিস রসুনের কোয়া ভালোভাবে পিষে রস করে নিন। রসের সাথে ৩ ভাগের ১ ভাগ পানি মিশিয়ে হালকা গরম করুন। এরপর রসুনের রসের ৩ ভাদের ১ ভাগ পরিমাণে মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। রানের চিপায় ও আশেপাশের সংক্রমিত স্থানে এই পেস্ট দিনে তিনবার ব্যবহার করবেন। প্রতিবার ব্যাবহারের পূর্বে কুসুম গরম পানি দিয়ে সংক্রমিত স্থান পরিষ্কার করে নিবেন। গোসলের পরে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে এবং ঘুম থেকে উঠে মিশ্রণটি ব্যাবহার করবেন। রসুন হলো একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল। অর্থাৎ রসুনে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ক্ষমতা থাকায় চুলকিনির জন্য ভালো উপকার দিবে। এছাড়াও রসুনে রয়েছে সালফাইট যে কারণে রসুন একটি শক্তিশালী ন্যাচারাল অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ হিসেবে কাজ করে একই সাথে মধু ছত্রাকের বিরুদ্ধে কাজ করে, হিস্টামিন নিয়ন্ত্রণ করে ত্বকের জ্বালাপোড়া ও চুলকানি কমায় এবং দ্রুত সংক্রমিত স্থানকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে সাহায্য করে।
- অ্যালোভেরা রস: অ্যালোভেরাতে রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য। যেকারণে ত্বকের যেকোনো ধরনের সংক্রমনের চিকিৎসায় ভাল উপসম পেতে অ্যালোভেরার রস সরাসরি আক্তান্ত স্থানে লাগানোর পরামর্শ দেয়া হয়। তাৎক্ষণির চুলকানি কমাতে খুবি কার্যকর এটি। অ্যালোভেরার গ্লাইকোপ্রোটিন উপাদান রানের চিপায় চুলকানি দ্রুত কমাতে কাজ করে।
রানের চিপায় চুলকানি প্রতিরোধে করনীয় কি?
- প্রতিদিন গোসলের সময় রানের চিপায় ভালভাবে পরিষ্কার করবেন।
- বিশেষ করে পুরুষরা ভালভাবে খেয়াল করলে দেখবেন হালকা লুদলুদ ভাব থাকে রানের চিপায়। বিশেষ করে অন্ডকোষের চারপাশে এমনটি বেশি হয়। এই রস বা লুদলুদ ভাব প্রতিদিন পরিষ্কার করবেন তাহলে ৯০% চুলকানি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
- উক্ত স্থানে সাবান ব্যাবহার করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন। কুসুম গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করবেন।
- টাইট-ফিটিং আন্ডারওয়ার ও প্যান্ট পরিধান করা যাবেনা।
- আন্ডারওয়ার ও প্যান্ট পরিধানের পর প্রতিদিন ভালোভাবে ধুয়ে শুকাতে হবে।
- লক্ষ্য রাখবেন যেন প্যান্টে ডিটারজেন্ট লেগে না থাকে।
- অন্য কারো আন্ডারওয়ার পরা যাবেনা।