ফর্সা হওয়ার ক্রিম ও ঘরোয়া উপায়

আল্লাহ সকলকে সৃষ্টি করেছে সুন্দর রূপ দিয়ে। কিন্তু গায়ের রং সবার এক রকম নয়। কারো গায়ের রং কালো আবার কারো ফর্সা। তাই যারা কালো তারা তাদের অনেকেই অসন্তুষ্ট থাকেন। এজন্য ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ব্যবহার করেন। তবে না জেনে বুঝে যেকোনো ক্রিম ব্যাবহার করলে খুব একটা লাভ হয় না। তাই আগে জানতে হবে ফর্সা হওয়ার জন্য কোন ক্রিমগুলো ব্যবহার করা উচিত। তাহলে চলুন এই আর্টিকেল থেকে ফর্সা হওয়ার ক্রিম ও ঘরোয়া উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
ফর্সা হওয়ার ক্রিম
গায়ের রং যদি কালো হয় তাহলে চিন্তার কিছু নেই। কেননা আজকাল ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন ধরনের ক্রিম পাওয়া যায়। তার মধ্যে থেকে কয়কেটি ক্রিমের নাম নিচে তুলে ধরা হলো:
Nivea Soft Cream (নিভিয়া সফট ক্রিম)
যারা ফর্সা হতে চান তারা নিভিয়া সফট ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন। এই ক্রিমটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক ভিতর থেকে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
নিভিয়া সফট ক্রিমটিতে তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। ক্রিমটিতে ভিটামিন-বি ও জোজোবা অয়েলের মতো পুষ্টিকারী উপাদান রয়েছে, যা ত্বককে ভিতর থেকে ফর্সা করে তুলতে কাজ করে।
Garnier Light Complete Cream (গার্নিয়ার লাইট কমপ্লিট ক্রিম)
গার্নিয়ার লাইট কমপ্লিট ক্রিমটি ত্বক ফর্সা করার জন্য বেশ কার্যকারী। এই ক্রিম সম্পূর্ণ লেবুর র্নিযাস দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। ক্রিমটিতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা ত্বকের কালচে দাগ দূর করে উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। তাই যারা দ্রুত ফর্সা হতে চান তারা এই ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন।
Himalaya herbal Clear Complexion (হিমালয় হারবাল ক্লিয়ার কমপ্লেক্সন)
যারা দ্রুত ফর্সা হতে চান তারা হিমালয় হারবাল ক্লিয়ার কমপ্লেক্সিন ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন। কেননা এই ক্রিমটিতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে, যা ত্বককে ভিতর থেকে ফর্সা করে তোলে। এছাড়াও এই ক্রিমটি ব্যবহার করলে ত্বক থাকে হাইড্রেশন ও সুন্দর।
Plum E Luminence Deep Moisturizing Cream (প্লাম ই লুমিনেন্স ডিপ ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম)
প্লাম ই লুমিনেন্স ডিপ ময়েশ্চারাইজিং ক্রিমটিতে ভিটামিন-এ ও অ্যান্টিঅ্যাক্সিডেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধান করে ত্বক করে তোলে উজ্জ্বল। এটি ফর্সা হওয়ার জন্য খুব কার্যকারী একটি ক্রিম, যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তাই নিশ্চিন্তে দিনের যেকোনো সময় এই ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন।
Wow Fairness Cream fairness (ওয়াও ফেয়ারনেস ক্রিম)
ওয়াও ফেয়ারনেস ক্রিমটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক ভিতর থেকে উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে উঠবে। এছাড়াও ত্বকের বলিরেখা ও কালচেদাগ দূর হয়ে যায়।
OLAY White Residence (ওলে হোয়াইট রেসিডেন্স)
মেয়েদের ত্বকের জন্য বেশ কার্যকারী একটি ক্রিম "ওলে হোয়াইট রেসিডেন্স"। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ক্রিমটি ত্বকের ডার্ক স্পট দূর করতে বেশ কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। তাই যারা গভীর ডার্ক স্পট নিয়ে চিন্তিত তারা এই ক্রিমটি ব্যবহার করতে পারেন।
Lakmé Youth Infinity Skin Sculpting Night Creme (ল্যাকমে ইয়ুথ ইনফিনিটি স্কিন স্কাল্পটিং নাইট ক্রিম)
ল্যাকমে ইয়ুথ ইনফিনিটি স্কিন স্কাল্পটিং নাইট ক্রিমটি ত্বকের ময়েশ্চরাইজ়িংই সুনিশ্চিত করে। পাশাপাশি ত্বক করে তোলে ঝলমলে ও উজ্জ্বল। কেননা এতে মাইক্রো ক্রিস্টাল ও লাইটেনিং ভিটামিন ভিটা-রিসোর্সিনলে রয়েছে, যা ত্বকের রং হালকা করে। ফলে ত্বক হয়ে ওঠে ঝলমলে ও ফর্সা।
Lakme Absolute Perfect Radiance Night Cream (ল্যাকমে অ্যাবসোলিউট পারফেক্ট রেডিয়েন্স নাইট ক্রিম)
ল্যাকমে অ্যাবসলিউট পারফেক্ট রেডিয়েন্স স্কিন লাইটেনিং নাইট ক্রিমটিতে মাইক্রো ক্রিস্টাল ও লাইটেনিং ভিটামিন ভিটা-রিসোর্সিনল রয়েছে, যা ত্বকের রং হালকা করে। এর ফলে ত্বক হয়ে ওঠে ঝলমলে এবং উজ্জল। এই ক্রিমটি সব ধরনের ত্বকে এবং সব ঋতুতে ব্যবহার করতে পারেন।
StBotanica Pure Radiance Anti Ageing Face Brightening Cream
এই ক্রিমটিতে ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-এ রয়েছে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই ক্রিমটি ত্বককে হাইড্রেট রাখতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত এই ক্রিমটি ব্যবহার করলে ত্বক স্থায়ীভাবে ফর্সা হয়ে ওঠবে।
ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়
- কমলা খোসা গুঁড়ো ও টক দই: প্রথমে কমলা খোসা রোদে শুকিয়ে ব্লেন্ডারের সাহায্য গুঁড়ো করে নিন। তারপর এই গুঁড়ো থেকে ১ টেবিল চামচ গুড়ো এবং ১ টেবিল চামচ টক দই নিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন। তৈরি করা ফেসপ্যাকটি ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে কিছু দিন ব্যবহার করলে ফলাফল নিজেই দেখতে পাবেন।
- হলুদ ও লেবুর রস: ১ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা বা হলুদের গুঁড়ো সাথে ২ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন। তৈরি করা ফেসপ্যাকটি মুখে লাগিয় ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ফেসপ্যাকটি অবশ্যই সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করবেন। এভাবে ব্যবহার করলে ১ মাসের মধ্যে সুফল পেতে শুরু করবেন।
- দুধ ও মধু: ১ টেবিল চামচ দুধ ও ১ চা চামচ মধু নিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এরপর তৈরি করা মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারেন। এভাবে ব্যবহার করলে ত্বক দ্রুত উজ্জ্বল ও কোমল হয়ে ওঠবে।
- টমেটো ও লেবুর রস: মাঝারি আকারের ২টি টমেটো ব্লেড করে রস বের করে নিন। এরপর এই রসের সাথে ২ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। তৈরি করা মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিদিন গোসালের আগে ব্যবহার করলে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে ত্বক হয়ে ওঠবে উজ্জ্বল।
- জই, গোলাপ জল ও দই: প্রথমে ৪ চা চামচ জই হালকা গরম পানিতে আধা ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর ভিজিয়ে রাখা জই পানি থেকে তুলে তার সাথে সমান্য পরিমাণে গোলাপ জল ও অর্ধেক চা চামচ দই মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। চাইলে মিশ্রনটি দিনে ২ বার ব্যবহার করতে পারেন। এই মিশ্রণটি ব্যবহার করার ফলে ত্বক উজ্বল ও কোমল হয়ে ওঠবে।
- গুঁড়ো দুধ, মধু, লেবুর রস ও বাদামের তেল: ১ টেবিল চামচ মধু, আধা টেবিল চামচ বাদামের তেল, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ গুঁড়ো দুধ নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে ত্বক হয়ে ওঠবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।
স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করার উপায়
ত্বকের রং ভেতর থেকে উজ্জ্বল করুন
যুগ যুগ ধরে রূপচর্চায় কাঁচা হলুদ ও দুধ ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই প্রতিদিন ১ গ্লাস কুসুম গরম দুধের সাথে অর্ধেক চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা মিশিয়ে পান করুন। এভাবে খেতে অসুবিধা হলে মধু মিশিয়ে নিতে পারেন। প্রতিদিন এভাবে হলুদ মিশানো দুধ পান করলে ত্বক ভিতর থেকে ফর্সা হয়ে ওঠবে।
যদি কাঁচা হলুদ বাটা মিশানো দুধ না খেতে পারেন। তাহলে প্রথমে দেড় ইঞ্চি সাইজের ১ টুকরো কাঁচা হলুদ কেটে নিন। এরপর টুকরো টুকরো করে কেটে ১ গ্লাস দুধের সাথে মিশিয়ে ফুটাতে শুরু করুন। ফুটাতে ফুটাতে দুধ যখন গাঢ় হলুদ রঙের হয়ে যাবে তখন হলুদ মিশানো দুধটি পান করুন। এভাবে প্রতিদিন ১ বার করে পান করতে পারেন।