ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ এবং করণীয়
ক্যান্সারকে মারণ ব্যাধি রোগ বলা হয়। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছরেই প্রায় ৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যায়। যে কারণে যা ক্যান্সার ধরা পড়ে সে তো ভিতর থেকেই ভেঙ্গে পড়ে, সাথে পরিবার পরিজনেরাও হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তখন তারা কি করবে বুজতে না পেড়ে জানতে চাই ক্যান্সার হলে মানুষ বাচে, বাচলেও বা কতদিন বাঁচবে। এমনটা স্বাভাবিক কারণ আমরা প্রিয় জনকে হারাতে ভয় পাই। যারা ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চান তারা আমাদের এই পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
নতুন এক গবেষণার মাধ্যমে জানা যায়, একজন ক্যান্সার রোগীর ৮টি লক্ষণ দেখে বলে দেওয়া যাবে, তিনি আর কতদিন বেচে থাকবেন। "ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস" এর এমডি এন্ডারসন ও ক্যান্সার সেন্টারের গবেষকরা সংশ্লিষ্ট গবেষণাটি পরিচালনা করেন।
ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ
ক্যান্সার হলে রোগীর শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। শরীরে কষ্ট তো থাকেই সাথে মনের কষ্ট দিগুন হয়ে যায়। যাইহোক, নিচে ক্যান্সার রোগীর মৃত্যুর লক্ষণ গুলো তুলে ধরা হল:
- নাক থেকে ঠোঁটে দুই কোণ পর্যন্ত ব্যাপক ভাঁজ পড়ে যায়, দেখতে অনেকটা হাসার সময় তৈরি হওয়া রেখার মতো দেখায়।
- আলোর হ্রাস বা বৃদ্ধির কারণে চোখের পিউপিল কে কোন রকম প্রতিক্রিয়া করতে দেখা যায় না।
- সামনের দিকে মাথা নুয়ে আসে।
- দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়।
- রোগী তার চোখের পাতা প্রায়ই বন্ধ করতে পারেন না।
- কথা বলার সময় মুখ ও জিহ্বার প্রতিক্রিয়া ধীরে ধীরে কমে যায়।
- রোগীর কণ্ঠনালী থেকে আওয়াজ আসে অনেকটা গর গর শব্দের মত।
- ক্যান্সার সৃষ্টি হওয়া স্থানে ব্যথা বৃদ্ধি পায় এবং যে প্রত্যঙ্গ খাবারের পুষ্টি ও উপাদান শুষে নেয় (গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল) তার ওপরের অংশে রক্তক্ষরণ হয়।
নোট: মূলত শুরুতেই ক্যান্সার ধরা পড়লে রোগ সারানো যায়। তাই আমাদের সবাইকে খুব সচেতন হতে হবে।
ক্যান্সার কি/ কেন হয়?
আমাদের শরীর অসংখ্য কোষের সমষ্টি। দেহের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী এই কোষ গুলি তৈরি হয়, বড় হয় এবং পরিণত বয়সে যথা নিয়মে আবার ধ্বংসও হয়ে যায়। নতুন নতুন কোষ এই ধ্বংস হয়ে যাওয়া কোষ গুলির জায়গা দখল করে নেয়। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের শরীরের কিছু জীনগত পরিবর্তন দেখা দেয়, যে কারণে দেহের এই সুনির্দিষ্ট নিয়মে বাধা পড়ে। এই অবস্থায় পরিণত কোষগুলি ধ্বংস না হয়ে, অনিয়ন্ত্রিত ভাবে দ্রুত হারে বাড়তে থাকে। এর ফলে শরীরে অসংখ্য অস্বাভাবিক কোষের সৃষ্টি হয় এবং এই অবস্থাকেই সাধারণ ভাবে ক্যান্সার বলা হয়।
ক্যান্সার হওয়ার কারণ
ক্যান্সার হওয়ার কোন সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে কিছু সাধারণ কারণে খুঁজে পাওয়া গেছে।
বয়স
সাধারণ ভাবে মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকাংশে কমে যায়। তাই বয়স যত বাড়তে থাকে ততই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে।
পারিবারিক ইতিহাস
ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সাথে জীনগত সম্পর্ক রয়েছে। পারিবারিকভাবে যদি কারো ক্যান্সার থেকে থাকে তাহলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
খাবার এবং জীবন-যাপনের ধারা
গবেষকরা খাবার এবং জীবন-যাপনের সাথে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। ধূমপানের ফলে কণ্ঠনালীর ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, লিভার ও মুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও পান-সুপারি, জর্দা, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ইত্যাদি খাবারের কারণেও ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। যারা কোনো শারীরিক পরিশ্রম করে না তাদেরও ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ
ক্যান্সার হলে সাধারণভাবে বেশ কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়। নিচে তার কয়েকটি লক্ষণ উল্লেখ করা হলো-
- ত্বকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যাওয়া।
- শরীরে ক্লান্তি বোধ হয়।
- অস্বাভাবিকভাবে রক্তপাত বৃদ্ধি পায়।
- খাবারে অরুচি দেখা দেয়।
- দীর্ঘ দিন ধরে গলা ভাঙা বা কাশি থাকা।
- জ্বর হওয়া, রাতে ঠান্ডা লাগা বা ঘামিয়ে যাওয়া।
- শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চাকা বা গোল হয়ে ওঠা।
- মলত্যাগ পরিবর্তন।
- মানসিক অস্বস্তি।
- অস্বাভাবিক ভাবে ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস পাওয়া।