পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি
পাইলস বা অর্শ মলদ্বারের জটিল একটি রোগ। গ্রাম অঞ্চলে এই রোগটি অর্শ নামেই বেশি পরিচিত। এই রোগটি মলদ্বরের ভিতরে, বাহিরে, চারপাশে কিংবা এক পাশে গোলাকার বা সুচাল গুটিকা মতো হতে দেখা যায়। আর ভিতরের সমস্যা অনুযায়ী মলত্যাগ করার সময় রক্ত বের হয় আবার অনেকের রক্ত বের হয় না। এছাড়া মলত্যাগ করার সময় কারো কারো ব্যথা হয় আবার কারো কারো ব্যথা হয় না। আপনারা এই আর্টিকেল থেকে পাইলস কেন হয়, পাইলসের লক্ষণ, পাইলস হলে করনীয়, পাইলস চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন।
পাইলস কেন হয়
পাইলস হলো মলদ্বারের ভেতরের আবরনী, তার রক্ত নালী ও অন্যান্য মাংশ পেশীর সমন্বয়ে গঠিত একটি কুশন বা গদির ন্যায় তুলতুলে নরম অংশ। এটি মলদ্বারের ভেতরেই থাকে। পাইলস হওয়ার কারণ হলো-
- দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া
- সহনীয় মাত্রার অধিক পরিশ্রম করা
- দীর্ঘ সময় ধরে মল আটকে রাখা
- আঁশযুক্ত ও শাক-সবজি না খাওয়া
- গর্ভকালীন সময় জরায়ুতে চাপ পারা
- পানি কমে খাওয়া
- লিভার সিরোসিস
- শরীরের অতিরিক্ত ওজন
- মলত্যাগের সময় বেশি চাপ দেওয়া
- বংশগতভাবে কারো থাকার কারণে
- অতিরিক্ত ওজন বা ভার উত্তলন করা
- দীর্ঘ সময় একটানা বসে থাকা
- এছাড়া প্রতিনিয়ত চিকেন ফ্রাই, ফাস্টফুড, বাটি কাবাব, ড্রাই ফুট, গ্রিল কাবাব, টিক্কা কাবাব ইত্যাদি খাওয়ার জন্য।
পাইলস হওয়া লক্ষণ
পাইলস হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো-
- মলত্যাগের সময় সামান্য পরিমাণে রক্ত বের হওয়া।
- মলদ্বারে ব্যথা ও ফুলে ওঠা।
- মলদ্বারে চুলকানি হওয়া।
- কোমর ও নাভীর নিচে ব্যথা হওয়া।
- কাটা ফোটার মতো বেদনা হওয়া।
পাইলস হলে কি করনীয়
পাইলস হলে নিম্নলিখিত পরামর্শ মেনে চলা উচিত:
- ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা।
- প্রতিদিন ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো।
- চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিশ্রাম করা।
- প্রতিদিন শাক-সবজি ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া।
- প্রতিদিন ১০-১২ গ্লাস পানি পান করা।
- মলত্যাগের সময় চাপ না দেওয়া।
- ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।
- ফাস্টফুড জাতীয় খাবার গ্রহণ না করা।
- যে সকল খাবার খেলে পেটে হজম হয় না সে সকল খাবার গ্রহণ না করা।
- অতিরিক্ত মশলা জাতীয় খাবার না খাওয়া।
- সহনীয় মাত্রার অধিক পরিশ্রম না করা।
- খাসি, গরু ও অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়া।
- শুটকির ভুনা, কফি, চা, মাখন, চীজ, চকোলেট, আইসক্রীম, কোমলপনীয় জাতীয় খাবার না খাওয়া।
- ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার না খাওয়া। যেমন- লুচি, পরোটা, পিঁয়াজি, পুরি, চিপস, সিঙ্গারা ইত্যাদি।
- সর্বশেষ কথা হলো ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করা।
পাইলস বা অর্শ রোগের চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি ঔষধ
পাইলস বা অর্শ রোগ হলো একটি জটিল রোগ যা মলদ্বারের চারপাশের নলকূপ এবং মলদ্বারের ভেতরে স্থানান্তর হওয়া কারণে অনেকের জীবনকে বিপর্যয়ময় করে থাকে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা একটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি যা অর্শ রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ঔষধ নিচে উল্লেখ্য করা হলো:
ঔষধের নাম:
- Aesculas Pentarkan ptk.3 (অ্যাসকুলাস পেন্টারকান ptk.3)
- Bioplasgen no 17 (বায়োপ্লাসজেন নং ১৭)
অ্যাসকুলাস ঔষধ খাওয়ার নিয়ম: প্রতিদিন ১০ ফুটা ঔষধ ১ কাপ পানির সাথে মিশিয়ে খাবেন।
বায়োপ্লাসজেন নং ১৭ ঔষধ খাওয়ার নিয়ম: প্রতিদিন ৪ টা করে বড়ি ৩ বার খাবেন।
প্রতিদিন নিয়ম মেনে ঔষধ সেবন করলে পাইলস রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। আশপাশের হোমিও ফার্মেসীতে উপরে উল্লেখিত ঔষধ পেয়ে যাবেন। অবশ্যই জার্মানী ঔষধ কিনা দেখে কিনবেন। তবে কিনবার বা সেবনের পূর্বে অবশ্যই রেজিস্ট্রেড হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের সাথে বিস্তারিত সমস্যার কথা উল্লেখ করবেন। কেননা রোগির অবস্থা ও বয়সভেদে ঔষধের ভিন্নতা হতে পারে।