ক্যানোলা খোলার নিয়ম | ক্যানোলা কত প্রকার? কি কি?

ক্যানোলা খোলার নিয়ম
ক্যানোলা খোলা অনেক সহজ একটি কাজ। তবে নবজাতকের ক্যানোলা খোলা মোটেও সাধারণ কাজ নয়। অতি সাবধানতা অবলম্বন করে ধীরে ধীরে ক্যানোলা খুলতে হয়। অনেক সরকারি হাসপাতালে দেখা গিয়েছে নার্স / ওয়ার্ড বয়ের হুরপার করার কারণে নবজাতকের ক্যানোলার টেপ কাটতে গিয়ে আংগুল কেটে ফেলে। এধরণের ঘটনা খুবি নিন্দনীয়। সেবার পেশায় এসে অবশ্যই দায়িত্ব এবং দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করা জরুরি।

ক্যানোলা খোলার নিয়ম

এই পোস্টের মাধ্যমে ক্যানোলা খোলার সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে। ক্যানোলা খোলার সময় প্রত্যেকের এই নিয়মসমূহ অনুসরণ করা উচিত।
  • একটা ট্রেতে স্যানিটাইজার, সিজার/ কাঁচি, একটা ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ ও কিছুটা কটন/তুলা নিতে হবে।
  • প্রথমেই রোগীর হাতে বা যে অংশে ক্যানোলা পড়ানো আছে তার চারপাশে কিছুটা অংশ কটনে স্যানিটাইজার নিয়ে ক্লিন করে নিতে হবে।
  • ক্যানোলার মাইক্রোফোর/ টেপ যদি হাতে রোল করে লাগানো থাকে (বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে) তাহলে সিজার/ কাঁচি দিয়ে খুব সাবধানতার সাথে কেটে নিবেন।
  • অনেক সময় দেখা যায় মাইক্রোফোর হাতের সাথে বা হাতের লোমের সাথে এমন ভাবে লেগে আছে টান দিলেই ব্যাথা লাগে সেক্ষেত্রে মাইক্রোফোরের চারপাশে কয়েক ফোটা স্যানিটাইজার দিন।
  • এরপর ধীরে ধীরে মাইক্রোফোর খুলবেন।
  • তারপর ক্যানোলা বের করে কটনসহ (কটনে স্যানিটাইজার লাগিয়ে নিবেন) চাপ দিয়ে ধরে রাখবেন কিছু সময়, যাতে রক্ত বের হতে না পারে।
  • যখন বুজবেন রক্ত আর বের হচ্ছে না তখন কটন তুলে সেই আংশ ভালো করে ক্লিন করে একটা ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিবেন।
  • রোগীকে ১০ থেকে ২০ মিনিট লক্ষ্য রাখতে বলবেন রক্ত বের হয় কিনা।

ক্যানোলা কতদিন রাখা যায়?

  • বাচ্চাদের হাতের ক্যানোলা ২-৩ দিন রাখাই ভালো।
  • প্রাপ্তবয়স্ক ব্যাক্তির ক্ষেত্রে ৩-৫ দিন রাখা যেতে পারে।
  • তবে ভেইন/ শিরা সহজে পাওয়া জায়না এমন রোগির ক্ষেত্রে ক্যানোলা ভালো থাকলে সর্বোচ্চ ৭ দিন রাখা যায়।
  • সে ক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে ক্যানোলার জায়গা ব্যাথা, ফোলা বা কোনো র‍্যাশ আছে কিনা।
  • ব্যাথা, ফোলা বা কোনো র‍্যাশ দেখা দিলে, দেরি না করে সাথে সাথে খুলে ফেলতে হবে।

ক্যানোলা কত প্রকার?

ক্যানোলা ৮ প্রকার। ক্যানোলার সাইজ সাধারণত ১৪ থেকে ২৬ গজের মধ্যে হয়ে থাকে। ক্যানোলা সাইজ এবং কালার নিচে দেওয়া হয়েছে।
  1. কমলা 14G (Orange)
  2. ধূসর 16G (Gray)
  3. সাদা 17G (White)
  4. সবুজ 18G (Green)
  5. গোলাপী 20G (Pink)
  6. নীল 22G (Blue)
  7. হলুদ 24G (Yellow)
  8. ভায়োলেট 26G (Violet)

নোট: ক্যানোলা সাইজ ১৭G নিয়ে আপনাদের মধ্যে সন্দেহ/ দিধা থাকতে পারে সে জন্য বলে রাখা ভালে ক্যানোলা ১৭G সাইজ এখন পাওয়া যায়।

বয়স ভেদে ক্যানোলার সাইজ ভিন্ন হয়ে থাকে। একজন রেজিস্ট্রেড নার্সের পরামর্শে রোগির জন্য ক্যানোলা কিনা উচিত। আমরা চাইলে বয়স ভিত্তিতে ক্যানোলার সাইজ বলে দিতে পারতাম এই পোস্টে। কিন্তু তা দিচ্ছিনা কারণ অনেক রোগির ক্ষেত্রে বয়সের হিসেবে ক্যানোলা মিলানো সমস্যা হয়ে থাকে। অনেকের হাতের সাইজ বা ভেইনের সাইজ ও অন্যান্য কন্ডিশন বয়স অনুপাতে বৃদ্ধি নাও পেতে পারে। একারণে রোগির ক্যানোলা সাইজ নির্ধারণে সরাসরি ডাক্তার/ নার্সের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url