ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায়
ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায়:
১. ডায়াবেটিসের কারণে ফোটা ফোটা প্রস্রাব হতে পারে। একারণে সর্বপ্রথম আপনাকে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে দেখতে হবে। যদি ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শের আলোকে ব্যাবস্থা নিবেন।
২. যদি আপনার ডায়াবেটিস না থাকে তাহলে প্রাথমিক অবস্থায় নিজে নিজে কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলে ফোটা ফোটা প্রস্রাব হওয়ার সমস্যা দূর করতে পারেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে মূত্রথলি ও মূত্রনালির পেশির দুর্বলতা দেখা দেয় এবং প্রস্রাব ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যায়। এজন্য বেশকিছু ব্যায়াম আছে যা করলে উপকার পেতে পারেন। যেমন:
- ব্লাডার ট্রেনিং: প্রস্রাবের বেগ শুরু হওয়ার ১০ মিনিট পর প্রস্রাব করার অভ্যাস করা এবং প্রশাব চলাকালীন কয়েকবার প্রসাব চেপে ধরুন কয়েক সেকেন্ডের জন্য।
- ব্রিজিং: বিছানায় সোজা চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। এরপর কোমর ওপরের দিকে ওঠান, ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ছাড়ুন। এভাবে দিনে ৪ বেলা ১০ থেকে ১৫ বার করে প্রতিবার করবেন।
- ডাবল ভোয়েডিং: প্রস্রাব করার শেষ হলেও কিছু সময় বসে থেকে অপেক্ষা করে আবার প্রস্রাবের চেষ্টা করুন। এ ছাড়া প্রস্রাবের বেগ না এলেও ২ থেকে ৪ ঘণ্টা পরপর প্রস্রাবের চেষ্টা করবেন, এতে টিসুগুলোতে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে।
- প্রস্রাবের পর কিছুক্ষণ টিসু পেপার ধরে হাটাহাটি করবেন।
- পেলভিক ফ্লোর: প্রথমে একটি চেয়ারে বসুন। মেরুদণ্ড সোজা রেখে সামনের দিকে একটু ঝুঁকুন। এবার প্রস্রাব ধরে রাখার জন্য দরকারি মাংসপেশিগুলো সংকুচিত করুন। এই অবস্থায় ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড থাকুন। এবার সংকুচিত মাংসপেশি ছেড়ে দিন। পুরো প্রক্রিয়াটি ১০ থেকে ১৫ বার এবং দিনে ৪ বার করুন।
- একটি শক্ত বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাঁটু ভাঁজ করুন। এবার দুই হাঁটুর ফাঁকে একটি ফুটবল রেখে এতে চাপ দিন এবং ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন আর ছাড়ুন। পুরো প্রক্রিয়াটি ১০ থেকে ১৫ বার এবং দিনে ৪ বার করুন।
৩. উপরের ব্যায়ামগুলো ৭ থেকে ১০ দিন ঠিকঠাকভাবে করুন, যদি ভাল ফল পান তাহলে নিয়মিত করুন। আর যদি কোনো সুফল না পান তাহলে ধারণা করা যায় অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে। এজন্য দেরি না করে একজন ভাল ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ দেখাবেন। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে তিনি আপনার চিকিৎসা করবেন।
৪. শুধু শারিরিক সমস্যার কারণেই যে ফোটা ফোটা প্রস্রাব এর সমস্যা সুষ্টি হয় তা নয়। অনেক রোগির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন মানসিক চাপের কারণে এমন সমস্যায় ভুগেন। তাই ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ থেকে তেমন আশানুরূপ ফল না পেলে একজন Psychologist দেখাবেন। আশাকরি এতদুর পর্যন্ত আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
সর্বশেষ আরেকটি কথা বলতে চাই, এই সমস্যাটি অনেক প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের হয়ে আসছে। গ্রাম-অঞ্চলে যদি ভালো হেকেমি চিকিৎসক বা কবিরাজের সন্ধান পান তাহলে উনার নিকট কবিরাজি চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারেন। যদিও আধুনিক সময়ে এই কবিরাজি চিকিৎসার উপর মানুষের তেমন ভরসা দেখা যায়না, কিন্তু বাস্তবে আমরা প্রায়শি বিভিন্ন রোগির কাছে জানতে পারি ভালো ফলাফলের কথা। তবে এই উপদেশটি আমরা শুধু তাদের জন্য করছি যারা সকল আধুনিক চিকিৎসায় ব্যার্থ হয়েছেন।