শীতে খুসখুসে কাশি সারাবে এই কয়েকটি ঘরোয়া চিকিৎসা

মধু ব্যবহার করুন--
মধু কাশি কমাতে সাহায্য করে এবং গলাব্যথা কমায়। বিভিন্ন গবেষণায় বলা হয়, মধু কখনো কখনো কাশিরোধী ওষুধগুলোর চেয়েও ভালো কাজ করে। মধু শ্লেষ্মা কমাতে সাহায্য করে। কাশি কমাতে এক কাপ লেবুমিশ্রিত চায়ের মধ্যে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। অথবা গরম পানিতে সামান্য মধু, লেবুর রস আর আদার রসের মিশ্রণ কফ এবং গলা ব্যথা নিরাময়ের জন্য বহুল প্রচলিত এই ঘরোয়া পানীয়। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্স (এনআইসিই) এবং পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড সম্প্রতি এ সংক্রান্ত নতুন একটি প্রস্তাবিত নির্দেশিকা প্রকাশ করে। সেখান থেকে জানা যায়, কফের সমস্যা পুরোপুরি সারিয়ে তোলার ব্যাপারে সীমিত কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে যেটা অনেকের কাজে আসতে পারে। গবেষকদের দাবি, মানুকা নামের এক ধরনের গুল্ম উদ্ভিদের ফুল থেকে মৌমাছিরা যে মধু তৈরি করে, সেটি-ই সবচেয়ে বেশি ঔষধিগুণ সম্পন্ন।

চকোলেট খেতে পারেনঃ
এক পিস চকোলেট খেয়ে দেখতে পারেন। চকোলেট শক্ত কফ নরম করে দিতে সাহায্য করে এবং কাশি কমায়। কাশি হলে অনেকেই মধু খান। তবে দোকান-বাজারে যেগুলি পাওয়া যায়, তাতে মোম মিশে থাকে। তাই তেমন কাজ দেয় না। তাই চকোলেট বা ডার্ক চকোলেটের উপর ভরসা করা যেতে পারে। 
চকোলেটের গুণাগুণ নিয়ে এর আগে সওয়াল করতে দেখা যায় লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের বিজ্ঞানীদেরও। তাঁরা বলেন, সর্দি-কাশির ওষুধে কোডিনও ব্যবহার করা হয়। যাতে মাথা ধরা, কাশি এবং কফের সমস্যা দূর হয়। কিন্তু তার চেয়ে দ্রুত গতিতে কাজ দেয় কোকো। মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সমস্যা কাটানো যায়। ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটে না।

কিন্তু চকোলেটই কেন? 
এর দুটো কারণ দেখিয়েছেন গবেষকরা। প্রথমত, মধুর মতো গলায় আঠালো একটা আস্তরণ তৈরি করে চকোলেট। তাতে স্নায়ুপ্রান্তগুলি ঢাকা পড়ে যায়। তাই ঠান্ডা লাগলেও গলা খুসখুস করা বন্ধ হয়ে যায়
তবে হট চকোলেটে কাজ হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। কারণ ঈষদুষ্ণ গরম দুধের সঙ্গে চকোলেট মিশিয়ে খেলে, তাড়াতাড়ি গলা বেয়ে নেমে যাবে সেটি। মোটা আস্তরণ আর গড়ে উঠবে না গলায়। আবার ওজন নিয়ে চিন্তা থাকলে, মিষ্টিছাড়া ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।

হলুদঃ
কাশি নিয়ন্ত্রণে হলুদ রীতিমতো ঐতিহাসিক ঘরোয়া উপাদান! এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে আধা চা চামচ হলুদের গুঁড়া এবং এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি দ্রুত কাশি কমাতে সাহায্য করে।

আদাঃ
কাশি কমাতে লেবুর শরবতের মধ্যে আদা কুচি মিশিয়ে খেতে পারেন। আদা শ্লেষ্মা দূর করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে এক চা চামচ মধুও মেশাতে পারেন।
আদা কাশি বা সর্দি হলে আদার রস খেলে তা খুব উপকার করে। আদা থেঁতো করে অনেকেই চায়ে দিয়ে দেন। সেই চা খেলেও কাশি কমে। আবার যদি কেউ চা না খান, তা হলে এমনি জলে আদা ফুটিয়ে তা খেলে বা মধু ও গোলমরিচের সঙ্গে সরবতের মতো করে খেলে উপশম মিলতে পারে। তবে, বেশি আদা খাওয়া ভালো না, কারণ এটি পেটের সমস্যা তৈরি করে ও হার্ট বার্নও করে। তাই সামান্য আদা দিয়ে দিনে একবার কয়েকদিন চা বা সরবত খেলে উপশম পাওয়া যেতে পারে।

পুদিনাঃ
পিপারমিন্ট বা পুদিনা সকলেরই জানা পিপারমিন্ট বা পুদিনায় মেন্থল থাকে যা নাকে সর্দি জমলে ন্যাসাল এরিয়া পরিষ্কার করে বা গলায় সর্দি জমলেও তা পরিষ্কার করে দেয়। কাশতে কাশতে গলা ব্যথা হয়ে গেলে পুদিনা সেই ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। দিনে ২-৩ বার পুদিনা দিয়ে বানানো চা খেলে কাশিও কমতে পারে, গলা ব্যথাও বা অস্বস্তিতেও উপশম মিলতে পারে।

ইউক্যালিপটাসঃ
ইউক্যালিপটাস এসেনশিয়াল অয়েলও এ ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। তাড়াতাড়ি ফল পেতে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে বুকে ও গলায় মালিশ করলে উপশম মিলতে পারে। যদি তা না হয়, ইউক্যালিপটাস এসেনশিয়াল অয়েলের স্টিম নিলেও নাক ও গলা পরিষ্কার করে যায়।

গার্গল করাঃ
গার্গল করলে গলাব্যথা কমে। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে ১৫ মিনিট ধরে গার্গল করুন। এভাবে বিরতি দিয়ে কয়েকবার করুন। এটি কাশি কমাতে বেশ কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url